জামিনের আবেদন খারিজ, ফের চারদিনের সিবিআই হেফাজত অনুব্রত মণ্ডলের 

স্পষ্ট বার্তা, আসানসোল ২০আগষ্টঃ

দশ দিনের সিবিআই হেফাজত শেষে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত তৃণমূলের বীরভুম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে শনিবার ফের আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়।এদিন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানালে তা নাকচ করে ফের চার  দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন আদালত।এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৪ আগষ্ট৷

গত ১১ আগষ্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই(CBI) আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। আদালত দশ  দিনের সিবিআই হেফাজতের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন।দশ  দিনের সিবিআই হেফাজত শেষে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধৃত তৃণমূলের বীরভুম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে শনিবার ফের আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়।তদন্তে নেমে বীরভূমের দোর্দন্ডপ্রতাপ এই জেলা সভাপতির নামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তির হদিস ইতিমধ্যেই পেয়েছে সিবিআই।তাই তাকে আরো কয়েকদিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে এদিন আদালতে আবেদন করে সিবিআইয়ের আইনজীবী।তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী কালিচরণ মিশ্র এদিন আদালতে বলেন তদন্তে সহযোগীতা করছেন না অনুব্রত মন্ডল।বিগত দশ দিনের হেফাজতে থাকাকালীন জেরা করে গরু পাচার মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তা আরো ভালোভাবে যাচাই করার প্রয়োজনে অনুব্রতকে আরো জিঙ্গাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।এর জবাবে ধৃত অনুব্রত মন্ডলের আইনজীবী সন্দীপন গাঙ্গুলি ও অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা বলেন তাদের মক্কেল অনুব্রত মণ্ডল তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন।যখন ডাকা হয়েছে তখনই গিয়েছেন।একই সাথে তার শরীর ঠিক না থাকার কারণ জানানো হয়েছে।তাই তাকে শর্ত সাপেক্ষে  জামিন দেওয়া হোক।এদিন দুপুরে দুই পক্ষের আইনজীবীর এক ঘন্টার সওয়াল জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অনুব্রত মণ্ডলের  জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন ও ফের চার দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন।এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৪ আগষ্ট।এর পরেই আদালত থেকে বের করে অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে সিবিআই আধিকারিকরা কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।ঠিক সেই সময় অনুব্রত মণ্ডলের মনোবল বাড়াতে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা জয় বাংলা শ্লোগান দিতে থাকেন।তবে ভীড়ের কারণে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সিবিআই আধিকারিকদের অসুবিধা না হয়,তার জন্যে পুলিশ কর্মীরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন।এদিনও সকাল থেকেই আসানসোল আদালতে অনুব্রতর উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।এদিন সকালে প্রথমে প্রসেঞ্জিৎ পুইতুণ্ডির নেতৃত্বে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আসানসোলের আদালত চত্ত্বর তথা ঘড়ি মোড়ে মাগুর মাছ বিক্রি করে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।একই সাথে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা সিবিআই আদালতের কাছে উপস্থিত হতে গেলে পুলিশ কর্মীরা তাদের বাধা দেয় ৷ পাশাপাশি উপস্থিত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরাও কংগ্রেস কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তেজনা প্রবন হয়ে পড়ে।কংগ্রেস নেতা প্রসেঞ্জিৎ পুইতুণ্ডি দাবি করেন,বীরভূমের গরু চোর কেষ্ট মণ্ডলের ১৭ কোটি টাকার এফ ডি,১৬ টি চালকল,৪৫-৫০ লাখের ৬ থেকে ৮ টি এসইউভি গাড়ির হদিস পেয়েছে সিবিআই ৷ তারপরেও মমতা ব্যানার্জি দাবি করছেন অনুব্রত নির্দোষ।আসলে এ সবই বিজেপি তৃণমূলের আঁতাতের গল্প।কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে আদালতের বিচার পর্ব শেষে যেদিন অনুব্রতকেও সুদীপ ব্যানার্জি কুনাল ঘোষের মত অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে।ফিরে আসার সময় যেন অনুব্রতকে ফের মাগুর মাছই বিক্রি করতে হয়।সেই কারণেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।পাশাপাশি তৃণমূলে কর্মী সমর্থকেরা দাবি করেন,এর আগে অনুব্রত মণ্ডলকে আদালতে পেশ করার দিনে সিপিআই(এম) ও বিজেপির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তৃণমূল নেতাকে বিব্রত করা হয়।এদিন ফের কংগ্রেসের কর্মীরা অনুব্রত বিরোধীতার শ্লোগান তুলেছে ৷ আসলে তৃণমূল নেতারা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।কেন্দ্রের সরকার তথা বিজেপির নির্দেশেই সিবিআই ইডির মত কেন্দ্রীয় সংস্থা তৃণমূল নেতাদের পিছনে পড়েছে।আসলে এটা এক ধরণের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ৷  তবে এদিন কলকাতা থেকে আসানসোলে সিবিআই এর বিশেষ আদালতে আসার পথে জামুড়িয়ার সাতগ্রাম অঞ্চলে ইসিএলের ট্রানজিট হাউসে প্রায় ২০-২৫ মিনিটের জন্যে অনুব্রত মণ্ডলকে বিশ্রাম দেন সিবিআই আধিকারিকরা।সেই সময় সেখানেও অনুব্রত মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷

About The Author

You might be interested in

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *